অনলাইনে নিরাপদ থাকতে...

বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং কার্যক্রমে নজরদারি আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। অনলাইনে কার্যক্রমে গোপন নজরদারি কিংবা সাইবার আক্রমণ থেকে নিজেদের কীভাবে নিরাপদ রাখা যায়, তা নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। অনলাইন নিরাপত্তা জোরদারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নিজেদের বেশকিছু করণীয় রয়েছে। একটু সতর্কতা ও ছোট কিছু পদক্ষেপ নিলে অনলাইনে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকা যায়। অনলাইন নিরাপত্তা জোরদারে করণীয় নিয়ে আয়োজনের শেষ পর্ব—

  • ফ্রি বা পাবলিক ওয়াই-ফাই কতটা নিরাপদ? বিভিন্ন কারণে পাবলিক ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়তে পারে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক কিছু সময়ের জন্য ব্যবহার করাটাও বড় ধরনের বিপদের কারণ হতে পারে। কাজেই পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে হলে হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেমচালিত ডিভাইস ব্যবহার করুন। পাবলিক ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবহার করে অনলাইন কেনাকাটা কিংবা যেকোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন এড়িয়ে চলুন।
  • অনলাইনে অপরিচিত কারো সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিনিময় করা ঠিক না। যদি করতেই হয়, তবে আগে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিন। কারণ অনলাইনে ছদ্মবেশী বন্ধুদের দ্বারা হ্যাকিংয়ের ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায়, ছদ্মবেশী বন্ধুরা ইনবক্সে বা ই-মেইলে ম্যালওয়্যারযুক্ত বার্তা প্রেরণ করে। বন্ধু তালিকার হওয়ায় কোনো প্রকার বাছবিচার ছাড়াই যে কেউ পাঠানো বার্তা খুলে বসেন। বিপদ ঘটে তখনই। মেসেজ আকারে পাঠানো এসব ম্যালওয়্যারে ক্লিক করলেই তথ্য বেহাতের শিকার হতে হয়।
  • ইন্টারনেট এবং মোবাইল ডিভাইস সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। অনেকেই নানা প্রয়োজনে একাধিক ই-মেইল বা সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন। তবে বিভিন্ন অনলাইন অ্যাকাউন্টে কখনই একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা ঠিক না। পাসওয়ার্ড অনলাইন নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই একাধিক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে হলে পৃথক এবং অক্ষর, নম্বর ও বিভিন্ন চিহ্ন দিয়ে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময় পর প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নিন। এতে করে একাধিক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করলেও অনলাইনে সুরক্ষিত থাকা যাবে।
  • সোস্যাল মিডিয়ায় কোনো পরিস্থিতিতেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তথ্য দেবেন না। অতীতে সাইবার অপরাধীদের অনলাইন সেবা ব্যবহারকারীদের নানা তথ্য নিয়ে সুবিধা নিতে দেখা গেছে। কাজেই সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট চালুর জন্য যেসব তথ্য চাওয়া হয়, শুধু সেসব তথ্যই সরবরাহ করা উচিত।
  • বিদেশ ভ্রমণ বা ছুটিতে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন তা জানিয়ে অনলাইনে কোনো পোস্ট করবেন না। একইভাবে আপনার সঠিক অবস্থান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অনলাইনে জানাবেন না। কারণ এসব তথ্য জানিয়ে পোস্ট করলে খুব সহজে সাইবার অপরাধীদের আক্রমণের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
  • বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় এখন লোকেশন ট্র্যাকিং ফিচার যুক্ত হয়েছে। এ ফিচার চালু থাকলে বন্ধু তালিকার কেউ আশপাশে অবস্থান করলে তার কাছে আপনার অবস্থান বিষয়ে নোটিফিকেশন চলে যায়। কাজেই প্রয়োজন ছাড়া লোকেশন ট্র্যাকিং ফিচার বন্ধ রাখা উচিত। সম্প্রতি লোকেশন ট্র্যাকিং ফিচারের মাধ্যমে খোদ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমেই ব্যবহারকারীদের অবস্থানগত তথ্য সংগ্রহের অভিযোগ ওঠে। অর্থাৎ লোকেশন ট্র্যাকিং ফিচার সর্বদা চালু রাখা অনলাইন নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।
  • অনলাইনে আপনি যা-ই আপলোড করুন না কেন, তা কখনই লুকানো সম্ভব নয়। কাজেই অনলাইনে কোনো বিষয়ে পোস্ট দেয়া, ছবি কিংবা ভিডিও আপলোডের ক্ষেত্রে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন