দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুট : বৈরী আবহাওয়ায় ব্যাহত ফেরি চলাচল বন্ধ লঞ্চ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জ

বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশের প্রধান দুই নৌরুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ীতে ফেরি পারাপার চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে স্পিডবোট ও লঞ্চ। এ অবস্থায় দুই রুটের চারটি ঘাটে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। এতে ঈদযাত্রার শুরুতেই দুর্ভোগে পড়েছে ঘরমুখী মানুষ। পশুবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ রুটে ঈদে যাত্রী, যানবাহন ও কোরবানির পশুবাহী ট্রাক পারাপারের জন্য ২০টি ফেরি চলাচলের কথা। তবে গতকাল সকাল থেকে এখানে চলাচল করছিল ১৭টি ফেরি। কিন্তু দুপুরের পর ঝড়ো বাতাস ও নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিলে আরো চারটি ফেরি বন্ধ রাখা হয়।

গতকাল বিকালে সরেজমিন দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরুবাহী প্রচুর ট্রাক আসতে থাকায় যানবাহনের এ সারি মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। তবে ট্রাকগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে পার করতে চার লেন সড়কের পশ্চিম লেনের একটি সারি ফাঁকা রাখা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা থেকে ট্রাকে গরু নিয়ে আসা আব্দুস সালাম বলেন, ১৭টি গরু নিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের অন্তত তিন কিলোমিটার দূরে মহাসড়কে আটকা পড়েছি। কখন যে ফেরিতে উঠতে পারব তার ঠিক নেই। প্রচণ্ড গরমে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় গরু মারা গেলে লোকসানে পড়তে হবে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি বলেন, সাধারণ যাত্রীবাহী যানবাহনের পাশাপাশি কোরবানির পশুবাহী ট্রাকের কারণে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী শুক্রবারের মধ্যে রো রো ফেরি শাহ মখদুম ও বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন মেরামত শেষে বহরে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে তীব্র স্রোতে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় গতকাল পাটুরিয়া ঘাটে আটকা পড়ে তিন শতাধিক যানবাহন। যানবাহনের সারি ঘাট এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, ঝড়ো বাতাস ও পদ্মায় প্রচণ্ড স্রোতে ফেরিগুলো স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না। ফলে ছোট ফেরিগুলো আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। রো রো ফেরি চলাচল করলেও পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগছে।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা সেক্টরের সহকারী পরিচালক ফরিদুল আলম বলেন, নৌদুর্ঘটনা এড়াতে গতকাল বেলা ৩টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝড়ো বাতাস না কমলে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হবে না।

এদিকে বিআইডব্লিউটিসি মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ নৌরুটে ১৮টি ফেরি, ৫৪টি লঞ্চ ও প্রায় ৫০০ স্পিডবোট চলাচল করে। কিন্তু গতকাল আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ী ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম বলেন, পদ্মায় নাব্য সংকটের কারণে কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটের পুরনো চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন চ্যানেল দিয়ে মাত্র ছয়টি ফেরি চলাচল করছে। ফলে ঘাটে যানবাহনের সারি তৈরি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন