‘কাজ দিয়ে কথার জবাব দেয়াই বড় অর্জন’

ফিচার প্রতিবেদক

দেশ-বিদেশের মঞ্চে তরুণ ও সম্ভাবনাময় নৃত্যশিল্পী হিসেবে আগে থেকেই নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন পূজা সেনগুপ্ত। এবার তার পথচলায় যোগ হলো গুরুত্বপূর্ণ এক অর্জন। সম্প্রতি জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক ড্যান্স কাউন্সিলের (সিআইডি) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন নৃত্যশিল্পী ও নির্দেশক পূজা সেনগুপ্ত এবং তার প্রতিষ্ঠিত তুরঙ্গমী স্কুল অব ড্যান্স। অনবদ্য এ অর্জনের পর পূজা কী ভাবছেন তার সামনের পথচলা নিয়ে? টকিজের মুখোমুখি হয়ে গতকাল তিনি এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। সঙ্গে জানিয়ে রেখেছেন তার নতুন পরিকল্পনা নিয়ে।

ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক ড্যান্স কাউন্সিলের সদস্য হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন। শুরুতেই এ অর্জন নিয়ে জানতে চাই।

শুরু থেকেই চেষ্টা ছিল আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আমাদের তথা বাংলাদেশের নিজস্ব নৃত্যশৈলীকে প্রামাণিক আকারে তুলে ধরা। এ পর্যায়ে ইউনেস্কোর মতো প্রতিষ্ঠান আমাকে ও আমার দলকে তাদের সদস্যপদ দিয়েছে। এতে আমাদের বিশ্বাস জন্মেছে, বাংলাদেশের যে নিজস্ব নৃত্যধারা, যার জন্য আমরা কাজ করছি, হয়তো তা দ্রুত আমরা অর্জন করে ফেলতে সক্ষম হব। সবকিছু মিলিয়ে ইউনেস্কো থেকে পাওয়া এ অর্জন খুবই আনন্দ ও সম্মানের।

কখনো ভেবেছিলেন এমন কিছু যোগ হবে অর্জনের ঝুলিতে?&dquote;&dquote;

সত্যি বলতে কী, আমরা কখনো ভাবিইনি, আমাদের কাজ ওরা পর্যবেক্ষণ করে কিংবা এসব নিয়ে খবর রাখে। কিন্তু এখন প্রমাণ হলো, তাদের গভীর ও আন্তরিক পর্যবেক্ষণেই ছিলাম আমরা। এ বিষয়ও আমাকে অনুপ্রাণিত করছে, কাজ তা যেখানে যেভাবেই করা হোক না কেন, তা যদি ঠিকঠাক হয়, তাহলে নিশ্চয়ই সবার নজরে আসবে।

এতদিন নিজেদের মতো করে কাজ করছিলেন। এখন এ রকম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ফলে এগিয়ে যাওয়ার পথে নতুন কোনো বিষয় আপনার ভাবনায় যুক্ত করবেন কিনা?

শুরু থেকে আমরা যে প্রতিজ্ঞা নিয়ে এগিয়ে চলছি, সেভাবে এগিয়ে চলাই আমাদের লক্ষ্য। স্বীকৃতি মানুষের চলার পথে প্রেরণা দেয়, এর গুরুত্বও অনেক। তার পরও আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটল। চেষ্টা করছি আমাদের পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নৃত্যের নিজস্বতাকে সবার কাছে তুলে ধরতে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মঞ্চে অন্য দেশের চেয়ে যেন আমাদের দেশকে আলাদা করা যায়, সেভাবেও তৈরি করছি নিজেদের।

নতুন কাজ নিয়ে যে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন।

ভিয়েতনামের জাতীয় নেতা হো চি মিনের ওপর একটি আত্মজৈবনিক নৃত্য পরিবেশনা নিয়ে এ মুহূর্তে চূড়ান্ত রিহার্সেল করছি। কাজটি করছি ভিয়েতনাম সরকারের জন্য এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায়। আমরা যতটুকু জেনেছি, কোনো জাতীয় নেতাকে নিয়ে এটাই প্রথম কোনো আত্মজৈবনিক নৃত্য পরিবেশনা। আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় এর শো হবে। কাজটি করতে গিয়ে আমাদের অনেক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান বাদ দিতে হয়েছে। তার পরও আমরা খুশি, এমন একজন বিশ্বনন্দিত নেতাকে নিয়ে ভালো কিছু করতে পারছি বলে। এর বাইরে তুরঙ্গমী স্কুল থেকে ‘বেসিক অব কোরিয়ওগ্রাফি’ বিষয়ে একটি নতুন ক্লাস শুরু করেছি।

শেষ প্রশ্ন, নৃত্যশিল্পী হিসেবে যেসব অর্জন ঝুলিতে পুরছেন, তা কি আপনার নিজের প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যেতে পারছে?

এ বিষয়ে বলতে চাই, অন্যদের কাছে আমার প্রত্যাশা কম। আমার বিশ্বাস, জীবনে কাজ করে যেতে হবে। কোনো কাজ করলে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হবেই?

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন