রেপো রেটের সঙ্গে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও কমাল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বণিক বার্তা ডেস্ক   

রেপো রেট গতকাল ফের কমিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। এ নিয়ে চলতি বছর চতুর্থবার রেপো রেট কমাল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শ্লথগতিতে চলা ভারতের অর্থনীতিকে সহায়তার জন্য এ পদক্ষেপ নিয়েছে আরবিআই। অন্যদিকে ২০২০ অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে নিজেদের পূর্বাভাস কমিয়েছে ব্যাংকটি। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, লাইভমিন্ট।

আরবিআইয়ের মনিটারি পলিসি কমিটি (এমপিসি) রেপো রেট ৩৫ বেসিস পয়েন্ট (বিপিএস) কমিয়ে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ করেছে। এ কমিটির প্রধান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। মার্জিনাল স্ট্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এমএসএফ) রেট ও ব্যাংক রেট করা হয়েছে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রয়টার্স পরিচালিত জরিপে অংশ নেয়া ৬৬ জন অর্থনীতিবিদের বেশির ভাগই পূর্বাভাস করেছিল যে আরবিআই নিজেদের বেঞ্চমার্ক রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমাতে পারে। অবশ্যই ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমানো হতে পারে বলে তিনজন জানিয়েছিলেন। রেপো রেট কমানোর ফল হিসেবে রিভার্স রেপো রেট এখন দাঁড়াল ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। রেপো রেট কমানোর জন্য এবং সহায়তামূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ অব্যাহত রাখার বিষয়ে এমপিসির সব সদস্য সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছেন।

রেপো রেট কমানোর সঙ্গে দেশটির প্রবৃদ্ধি নিয়ে নিজেদের পূর্বাভাস কমিয়েছে আরবিআই। নতুন পূর্বাভাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি জানিয়েছে, তাদের হিসাব অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। আগের পূর্বাভাসে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা জানিয়েছিল আরবিআই।

নিজেদের বিবৃতিতে আরবিআই বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস জুনের করা ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ করা হলো, যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫ দশমিক ৮ থেকে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং দ্বিতীয়ার্ধে ৭ দশমিক ৩ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর ঝুঁকিগুলো কিছুটা কমার কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তহবিল সংকটে পড়লে রেপো রেট অনুযায়ী তাদের ঋণ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেশির ভাগ বিশ্লেষকই প্রত্যাশা করেছিলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গতি আনার জন্য রেপো রেট কমাতে পারে আরবিআই।

সর্বশেষ, এক দশক আগে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময় পর পর রেপো রেট কমিয়েছিল আরবিআই। ওই সময় বিশ্বের বেশির ভাগ বড় কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রবৃদ্ধি ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

ভারতের অর্থনীতি মোটেই ভালো নেই। গাড়ি বিক্রিসহ প্রধান নির্দেশকগুলো বলছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশটির অর্থনীতি যে বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে গেছে, তা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এখনো বেশ সময় লাগবে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ভারতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা পাঁচ বছরের সর্বনিম্ন।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু রেপো রেট কমানো ভারতের অর্থনীতিকে সাহায্য করতে পারবে না, যদি না সুবিধাগুলো ভোক্তা ও করপোরেট ঋণগ্রহীতাদের কাছে পৌঁছানো যায়। ব্যাংকগুলো মন্দঋণের ভারে বিপদগ্রস্ত। তবে এর পরও আরবিআইয়ের নির্দেশনা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলো সুদহার কমানোর ক্ষেত্রে শ্লথগতিতে এগোচ্ছে।

অন্যদিকে এমপিসি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সিপিআই মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ৩ দশমিক ১ শতাংশ এবং চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে ৩ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সিপিআই মূল্যস্ফীতি দাঁড়াতে পারে ৩ দশমিক ১ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন