ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী ইইউ

বণিক বার্তা ডেস্ক   

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ আঞ্চলিক বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে ভিয়েতনাম। দেশটির সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়াতে এরই মধ্যে বেশকিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু করেছে জোটটি। খবর ভিএনএ।

ভিয়েতনামে ৩-৫ আগস্ট পর্যন্ত তিনদিনের আনুষ্ঠানিক সফর করেন ইউরোপীয় কমিশনের (ইসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইইউর ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসির শীর্ষ প্রতিনিধি ফেদেরিকা মঘেরিনি। এর মধ্যে সফরের শেষ দিন ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফাম বিন মিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। 

সোমবার সাক্ষাতের সময় বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা ও নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন ভিয়েতনাম ও ইইউর দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। ফাম বিন মিন ও মঘেরিনি অতীতে ভিয়েতনাম ও ইইউর মধ্যে শীর্ষপর্যায়ের বৈঠকগুলোর ফলাফলের গুরুত্ব উল্লেখ করেন। পাশাপাশি রাজনীতি, জাতীয় প্রতিরক্ষা, অর্থনীতি-বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতাসহ বিভিন্ন খাতে দুই পক্ষের অংশীদারিত্ব তুলে ধরেন। এছাড়া সম্প্রতি স্বাক্ষরিত ইইউ-ভিয়েতনাম ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (ইভিএফটিএ) এবং ইইউ-ভিয়েতনাম ইনভেস্টমেন্ট প্রটেকশন এগ্রিমেন্ট (ইভিআইপিএ) নিয়েও আলোচনা করেন তারা।

এদিকে ২০২০ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩০ বছর পূর্ণ করবে ভিয়েতনাম ও ইইউ। এ উপলক্ষ সামনে রেখে দুই পক্ষের স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও অগ্রসর দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গভীর করা প্রয়োজন বলে একমত হয়েছেন ফাম বিন মিন ও মঘেরিনি। অর্থনীতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ভিয়েতনাম-ইইউ সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিস্তম্ভ বলে উল্লেখ করে সর্বস্তরে বিনিময় বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।

ইসি ভাইস প্রেসিডেন্টের এ সফর ভিয়েতনাম-ইইউ অংশীদারিত্ব আরো জোরালো করতে এবং ব্যাপক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে জানিয়েছেন ফাম বিন মিন। এ সময় তিনি ইভিএফটিএ ও ইভিআইপিএ ত্বরান্বিত করার জন্য ইসি ও মঘেরিনিকে ধন্যবাদ জানান। অন্যদিকে চুক্তি দুটি স্বাক্ষরের ঘটনাকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন মঘেরিনি। একই সঙ্গে চুক্তিগুলো দ্রুত অনুমোদন করার জন্য ভিয়েতনামের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ চুক্তি দুটি ইইউ ও ভিয়েতনামের জন্য প্রকৃত সুফল বয়ে আনবে বলে জানান ইসি ভাইস প্রেসিডেন্ট।

বৈঠক থেকে ইইউর প্রতি ভিয়েতনামের সামুদ্রিক খাদ্যের ওপর আরোপিত সতর্কতামূলক ‘হলুদ কার্ড’ প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন ফাম বিন মিন। এছাড়া ভিয়েতনামের সঙ্গে ভলান্টারি পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট অন ফরেস্ট ল এনফোর্সমেন্ট গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ট্রেড (ভিপিএ/এফএলইজিটি) স্বাক্ষরের জন্য ইউরোপীয় জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ইইউ এ খাতগুলোয় ভিয়েতনামের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন মঘেরিনি।

দুই শীর্ষ কর্মকর্তা বৈঠকে পূর্ব সাগর ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিয়েও আলোচনা করেছেন। বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং এ অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইন নিশ্চিত করতে ইইউর অবস্থানের প্রশংসা করেন ফাম বিন মিন। অন্যদিকে নেভিগেশন ও বিমান চলাচলের স্বাধীনতাসহ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে বিরোধ নিষ্পত্তির জায়গায় ইইউর অবস্থান নিয়ে ভিয়েতনামকে আশ্বস্ত করেন মঘেরিনি।

বৈঠকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করেন তারা। ২০২০ সালে ভিয়েতনামের আসিয়ানের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন সামনে রেখে বহুপক্ষীয় ফোরামগুলোয়ও সহযোগিতা জোরদারে একমত হয়েছেন তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন