চামড়ার দাম ঢাকায় ৪৫-৫০ ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ঢাকা ছাড়া সারা দেশে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। গতকাল চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গতকাল চামড়া খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবু রায়হান আল বেরুনীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি চামড়া খাতের সংগঠনগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রী চামড়ার দাম ঘোষণা করেন।

ট্যানারি মালিকরা কোরবানির পশুর চামড়ার দর ৪০ শতাংশের বেশি কমানোর জন্য দাবি জানিয়েছিলেন। তবে সে প্রস্তাব আমলে নেয়া হয়নি। এবার মাঠপর্যায়ে কোরবানির পশুর চামড়া কেনাবেচার ক্ষেত্রে গত বছরের একই দর নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ দর নির্ধারণ করল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে গরুর চামড়া ছাড়াও সারা দেশে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দর নির্ধারণ হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। বকরির চামড়া কেনাবেচা হবে ১৩ থেকে ১৫ টাকায়। মহিষের চামড়া গরুর চামড়ার দরে বিক্রি হবে। কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে এ দরে লবণ ছাড়া চামড়া কিনবেন ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীরা।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কারখানা স্থানান্তরের পর ট্যানারি মালিকরা এখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। তবে বাজারে কৃত্রিম চামড়ার পণ্যের পাশাপাশি চামড়াজাত পণ্যের দামও বেড়েছে। কোরবানির চামড়া বিক্রির টাকা সেবামূলক কাজে ব্যবহার হয়। তাই এটি মানবিকভাবে বিবেচনা করতে হবে। এ কারণে গত বছর যে দাম ছিল, এবার সে দামেই বিক্রি হবে। এ নির্ধারিত দর অনুযায়ী বেচাকেনা করতে ট্যানারি মালিকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে কাঁচা চামড়ার বাজার দর বিবেচনায় নিয়ে কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কোরবানির পশুর চামড়া গরিবের হক। তারা যেন ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। চামড়া জাতীয় সম্পদ, শিল্পের কাঁচামাল যাতে পাচার হয়ে না যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পশুর চামড়া যথাযথ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করতে হবে। যাতে কোনো চামড়া নষ্ট না হয়।

সভায় বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, চামড়া শিল্পনগরী কমপ্লায়েন্স না হওয়ায় আমরা রফতানির বাজার ধরতে পারছি না। এ কারণে গত কয়েক বছর ধরে রফতানি কমছে। তাই এবার চামড়ার দর ৪০ শতাংশের বেশি কমিয়ে নির্ধারণের প্রস্তাব দেন।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, গত পাঁচ বছরে চামড়া খাতে ধস নেমেছে। সঠিকভাবে ট্যানারি স্থানান্তরিত না হওয়ায় কমপ্লায়েন্স হয়নি চামড়া শিল্পনগরী। এতে রফতানির বাজারে চামড়ার চাহিদা কমেছে। এ কারণে তিনি চামড়ার দাম কমিয়ে নির্ধারণের প্রস্তাব দেন। চামড়া শিল্পের বর্তমান দুর্দশার জন্য তিনি শিল্প মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন