এএফসি কাপ নকআউট পর্বে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে পরিষ্কার ফেভারিট এপ্রিল টোয়েন্টি-ফাইভ স্পোর্টস ক্লাব। এটা মানছেন সদ্য আবাহনীতে যোগ দেয়া মিসরীয় সেন্টারব্যাক আলায়েলদিন নাসর। এ মিসরীয় ফুটবলারের মতে, উত্তর কোরিয়ার ক্লাবটিকে হারানো কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। ২৮ বছর বয়সী এ ডিফেন্ডারের কথায়, ‘কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। দল হিসেবে আবাহনী ভালো। এখানে ভালো ফুটবলার ও কোচ রয়েছেন। প্রতিপক্ষ হিসেবে এপ্রিল টোয়েন্টি-ফাইভকে শ্রদ্ধা করি। তবে আমার বিশ্বাস, তাদের হারানো সম্ভব’।
মৌসুমজুড়ে দুর্দান্ত খেলা আফগানিস্তানের ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানির চলতি মাসেই ভারতীয় সুপার লিগের ক্লাব চেন্নাইয়ান এফসিতে যোগ দেয়ার কথা। এদিকে ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করা ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ওয়েলিংটন প্রাইওরিকে ছেড়ে দিয়েছে আকাশি-হলুদরা। দুজনের শূন্যতা পূরণে ডিফেন্ডার আলায়েলদিন নাসর ও দক্ষিণ কোরিয়ান মিডফিল্ডার তায়ে মিন লিকে উড়িয়ে আনা হয়েছে।
দুই ফুটবলার কয়েক দিন আগে দলে যোগ দিয়েছেন। স্বল্প সময়ের দেখায় আবাহনী সম্পর্কে যে ধারণা হয়েছে, তাতে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন মালদ্বীপের ক্লাব টিসি স্পোর্টসে খেলা আলায়েলদিন। এ সেন্টারব্যাক দুই বছর আগে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে টিসি স্পোর্টসের হয়ে ঢাকায় খেলে গেছেন। এএফসি কাপে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে খেলেছেন তিনি।
২০১১ সালে মিসর অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়েও খেলেছেন এ ডিফেন্ডার। সাইঘানির শূন্যতা পূরণের চ্যালেঞ্জ আলায়েলদিনের ওপর। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত সাইঘানি খেলতে পারবে কিনা জানি না। তাকে না পাওয়া গেলে আমার বাড়তি দায়িত্ব বর্তাবে। দলে অন্য যারা রয়েছেন, তারাও ভালো মানের ফুটবলার।’
এপ্রিল টোয়েন্টি-ফাইভের বিপক্ষে ২১ আগস্ট হোম ম্যাচ খেলবে আবাহনী। ২৮ আগস্ট অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে পিয়ংইয়ং সফর করবে ছয়বারের প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা। দুই লেগের দ্বৈরথ শুরুর আগে নিজেদের রক্ষণ সুরক্ষিত করতে হবে বলে মনে করেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও ল্যামোস।
‘আলায়েলদিন বাম পায়ে খেলা দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার। সে আমাদের রক্ষণে নেতৃত্ব দেবে, রক্ষণটা গোছাবে। এপ্রিল টোয়েন্টি-ফাইভের বিপক্ষে খেলার আগে আমাদের রক্ষণে আরো গোছালো হতে হবে’—জানান ল্যামোস। দক্ষিণ কোরিয়ান মিডফিল্ডার লি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘লি কঠোর পরিশ্রমী, বক্স টু বক্স খেলা মিডফিল্ডার। সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলার ক্ষমতাও রয়েছে তার।’ দুই ফুটবলারের অন্তর্ভুক্তি দলের শক্তি বৃদ্ধি করবে বলে মনে করেন আবাহনী কোচ। তিনি বলেন, ‘দুই ফুটবলারের ওপর আমার ভীষণ আস্থা রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, তাদের অন্তর্ভুক্তি এএফসি কাপে আবাহনীকে আরো শক্তিশালী করে তুলবে।’
দুই লেগের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে আবাহনী কোচ বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার দলটি দ্রুতগতিতে দুই উইং ধরে খেলে। প্রতিপক্ষ দল হয়তো বক্সে প্রচুর ক্রস ফেলবে। তাদের রোখার জন্য দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার প্রয়োজন ছিল। এ জায়গায় আলায়েলদিন বেশ কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। দেখা যাক, কী হয়।’
সাইঘানিকে নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও এখনো হাল ছেড়ে দেয়নি আবাহনী। দলের প্রয়োজনের সময় রক্ষণ ছেড়ে উপরে এসে গোল করা এ ডিফেন্ডার ছাড়াও চার বিদেশী রয়েছেন ধানমন্ডির ক্লাবটির তাঁবুতে। শেষ পর্যন্ত সাইঘানিকে পাওয়া গেলে চারজনের মধ্যে একজনকে বাদ দিতে হবে আকাশি-হলুদদের।
এ সম্পর্কে দলটির কোচিং স্টাফ ও সাবেক ফুটবলার কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন, ‘সাইঘানি দলের সঙ্গে পুরো মৌসুম ছিল। অন্যদের সঙ্গে তার বোঝাপড়াও ভালো। তাকে পাওয়া গেলে ভালো হতো। এ নিয়ে চেন্নাইয়ান এফসির সঙ্গে কথা চালিয়ে যাচ্ছে আবাহনী কর্তৃপক্ষ।’ জাতীয় দলের সাবেক সেন্টারব্যাক যোগ করেন, ‘মাসিহকে পাওয়া গেলে বাকি চার ফুটবলারের মধ্য থেকে একজনকে বাদ দিতে হবে। ম্যাচের আগে খেলোয়াড় পুনর্নিবন্ধনের সুযোগ থাকে। আবাহনী হয়তো সে সুযোগ নেবে।’