ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে: কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় প্রতিদিন নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাস্তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তিনি বলেন, ঢাকা সিটিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এই সংখ্যা আমরা যতটাই মুখে নিয়ন্ত্রণের কথা বলি না কেন। এখনও এটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এটা হল বাস্তবতা।

মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ কথা বলেন তিনি।

ডেঙ্গু বিরোধী প্রচারণা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় দলের নেতাকর্মীদের অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে পরিচ্ছন্নতার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা তিনদিন তিনটি জায়গায়, প্রথমত ধানমন্ডি এলাকায় পরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে, এর পর আমরা ফার্মগেট এলাকায় এবং শান্তিনগর এলাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে পালন করেছি। এই কর্মসূচিটি আমরা সিনসিয়ারলি এবং সিরিয়াসলি নিয়েছি। জনস্বার্থে, দেশের স্বার্থে এবং দলের স্বার্থে আমাদের নেত্রীর নির্দেশনায় এই কাজটি আমরা করবো। আমরা নামকা ওয়াস্তে দু-চার জায়গায় কর্মসূচি পালন করলাম, বেশিরভাগ ওয়ার্ডে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা হল না, কর্মসূচি পালন হল না। এই দায়সারা কর্মসূচির কোন প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, এতে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্রও বন্ধ হবে না, এডিস মশার উৎসমূল বন্ধ করতে পারবো না। ডেঙ্গু জ্বরের যে ভয়ঙ্কর বিস্তার এই বিস্তারও আমরা রোধ করতে পারবো না।

কাদের বলেন, সামনে ঈদ, ঈদের সময় সিটি থেকে অনেকেই গ্রাম বাংলায় ঘরমুখো হবেন। অনেকেই যাচ্ছেন, যাবেন। এখানেও এই ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারের একটা আশঙ্কা আছে। আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের প্রথম কাজটি হচ্ছে এই সচেতনতা এবং সতর্কতা প্রচার করা।এই মশার প্রজনন ও বংশ বিস্তার বন্ধের পূর্ব শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা।

ঢাকা শহরের মোট একশত নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা মঠে নামায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে ফটোসেশন করার জন্য এই অভিযান নয়। আমরা দেখতে চাই ঢাকা সিটির প্রত্যেক ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং নেত্রী এটা জানতে চেয়েছেন। নেত্রী জানতে চেয়েছেন কয়টা ওয়ার্ডে নেত্রীর নির্দেশনা পালন হয়েছে। কতজন করেছেন হাত তুলে কী বলবেন, ১০৯টার মধ্যে হাত তুলেছেন কয় জন? তার মানে কম সংখ্যক।

এ সময় হাত গুণে দেখা যায় ১৩ জন কাউন্সিলর হাত তুলেছেন। কাদের বলেন, যারা করেননি। আমি চিহ্নিত করে লজ্জা দিতে চাই না, শুধু বলতে চাই কমিটমেন্ট থেকে কাজটা করেছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশ মনে করতে হবে। যারা করেছেন তাদের ধন্যবাদ, আর এই ধন্যবাদ অব্যাহত থাকবে। যারা করেননি নেত্রী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রোগ্রাম না করলে কিন্তু অপ্রকাশিত থাকবে না।

তিনি বলেন, কাজেই প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচি করবেন। ওয়ার্ডের নেতারা আছেন আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। আপনারা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের সহযোগিতা করবেন। নিজের কর্মস্থল নিজের অফিস আদালত, বাসা বাড়ি পরিষ্কার রাখবেন। 

ভয়ঙ্কর এডিস মশা মন্ত্রী এমপি সাংবাদিক কাউকে ছাড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এই এডিস মশা ভয়ঙ্কর, এই এডিস মশা কারও চেহারার দিকে তাকায় না, আপনি কাউন্সিলর আপনি কি নেতা, আপনি কি মন্ত্রী, এমপি, মেয়র কোন দিকেই তাকাবে না। এডিশ মশা সামনে পেলেই রক্ত খাবে। এমপির রক্ত খাবে, মন্ত্রীর রক্ত খাবে, নেতার রক্ত খাবে কাউন্সিলরের রক্ত খাবে কাউকে ছাড়বে না। সাংবাদিকদেরও রেহাই নেই।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেব, সবাইকে সচেতন হতে হবে, সাবধান হতে হবে। আমাদের যে করনীয় তা পালন করতে হবে। শেথ হাসিনার নির্দেশ ডেঙ্গু মুক্ত বাংলাদেশ, এই কথা শুধু মুখে নয় একশানে বাস্তবায়ন করতে হবে। নোংরা শহরের মধ্যে আমরা বিশ্বে চার নম্বরে, তাহলে কেন এডিশ মশার প্রজনন হবে না। কেন বংশ বিস্তার হবে না। আরও অনেক ভয়ঙ্কর চিকুনগুনিয়ার মত্য ব্যাধিতে অনেকের প্রাণ হানি ঘটেছে। ঢাকাকে ক্লিন করতে হবে, ঢাকাকে গ্রিন করতে হবে। আমাদের এবং প্রতিনিধিদের যৌথ ভাবে মাঠে নামতে হবে।

মিডিয়া না থাকলে ডেঙ্গুকে গুজব বলে চালিয়ে দিত সরকার বিএনপির এমন বক্তব্যের দৃষ্টি আকর আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি বলবো মিডিয়া না থাকলে বিএনপি যে একটা রাজনৈতিক দল এর অস্তিত্ব খোঁজে পাওয়া কঠিন হতো। মিডিয়া না থাকলে বিএনপি যে আছে এটা বোঝার কোন উপায় আছে?

নির্বাচনে তারা ব্যর্থ, আন্দোলনে তারা ব্যর্থ। এত বড় বন্যা হয়ে গেলে সিটে ফোটা দু একটা জায়গায় গিয়ে ফটো সেশন করে শেষ। ডেঙ্গু অভিযানেও তারা নেই তারা শুধু মুখে মুখে আবাসিক প্রতিনিধি পল্টনের অফিসে বসে কথা বলছে। মিডিয়া না থাকলে আজকে জনগন কিভাবে বুঝতো এই দল যে আছে?

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ,  জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাক আমিনুল ইসলাম  আমিন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন