দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং মামলা

সকালে গ্রেফতার বিকালেই জামিন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি নোয়াখালী

৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় সকালে গ্রেফতারের পর বিকালেই জামিন পেয়েছেন নোয়াখালী জজ কোর্টের নাজির মো. আলমগীর। গতকাল সকাল পৌনে ৯টার দিকে মাইজদীর কৃষ্ণরামপুরের নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বেলা ৩টায় তাকে সিনিয়র স্পেশাল জজ ছালেহ্ উদ্দিন আহমদের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত বিকাল সাড়ে ৪টায় তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।

এ সময় দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম। আসামিপক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন।

এদিকে দুর্নীতি দমন ও মানি লন্ডারিং মামলায় এত অল্প সময়ের মধ্যে জামিন পাওয়ায় ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন একাধিক আইনজীবী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জজ কোর্টের একাধিক আইনজীবী বলেন, দুর্নীতি দমন আইনে দায়ের করা প্রায় প্রত্যেকটি ধারাই জামিন অযোগ্য। তবে আদালত যেহেতু বিজ্ঞ, সেক্ষেত্রে আদালত আসামিপক্ষের আইনজীবীর শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে এ জামিন দিয়েছেন। এটা একান্তই আদালতের বিষয়। আবার অনেকের মতে, দুদকের আইনজীবীর দুর্বলতার কারণেও আসামিপক্ষ সুযোগ পেতে পারে।

তবে দুর্বলতার বিষয়টি মানতে নারাজ দুদকের আইনজীবী আবুল কাশেম। তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালত চাইলে যে কাউকেই জামিন দিতে পারেন। এটা আদালতের একান্ত বিবেচনার বিষয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামিনপ্রাপ্ত আসামি মো. আলমীগর ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা উপজেলার দক্ষিণ লালপুর গ্রামের মো. নূরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ১৯৯৭ সালে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে নোয়াখালী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময় পদন্নতি পেয়ে তিনি নাজির হন।

দুদক নোয়াখালী জেলা সমন্বিত কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর আলমগীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু করে দুদক। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে ৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, সরকারি কর্মচারীর তথ্য গোপন করে ব্যবসা দেখিয়ে ২৭ কোটি টাকা ব্যাংকে লেনদেন, বেশ কয়েকবার বিভিন্ন দেশে ভ্রমণসহ নানা জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এসব অপকর্মে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী জুডিশিয়াল নাজির নাজমুন নাহার, বোন আফরোজা আক্তার ও বন্ধু বিজন ভৌমিক। পরবর্তী সময়ে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুদক নোয়াখালী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদ বাদী হয়ে গত রোববার দুর্নীতি দমন ও মানি লন্ডারিং আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলা দুটিতে মো. আলমগীরকে প্রধান আসামি করা হয়। গতকাল সকালে তাকে গ্রেফতারের পর বেলা ৩টার দিকে আদালতে সোপর্দ করে দুদক। পরে আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিকালে আসামির অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেন।

জানতে চাইলে দুদক নোয়াখারী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে আসামিকে গ্রেফতার করে গতকাল বেলা ৩টার দিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তবে আসামি জামিন পাওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন