তিন প্রান্তিকে কপারটেকের ইপিএস ৫৮ পয়সা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৮-১৯ হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই ’১৮-মার্চ ’১৯) কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর পরিশোধের পর নিট মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আইপিও শেয়ার হিসাব-পরবর্তী শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৮ পয়সা। এর আগের বছর একই সময় কোম্পানিটি ৩ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিট মুনাফা করেছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডিএসই সূত্র জানায়, গত হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং আইপিও-পরবর্তী ইপিএস ২০ পয়সা। এর আগের বছর একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৮১ লাখ ১০ হাজার টাকা। আইপিও-পরবর্তী কোম্পানিটির মোট পরিশোধিত মূলধন হবে ৬০ কোটি টাকা এবং শেয়ার সংখ্যা ছয় কোটি।

এদিকে আজ উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হবে। ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ারটির ট্রেডিং কোড হবে ‘ঈঙচচঊজঞঊঈঐ’। আর ডিএসই কোম্পানি কোড ১৩২৪৭।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬৭০তম কমিশন সভায় কপারটেকের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়া অনুমোদিত হয়।

এ সংকটের সূত্রপাত কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর। কোম্পানিটির নিরীক্ষক হিসেবে ছিল আহমদ অ্যান্ড আখতার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস। পরবর্তীতে কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনের অসংগতির বিষয়ে যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ ও ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)। এর মধ্যে ডিএসই কর্তৃপক্ষ কপারটেকের বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ বিএসইসির কাছে পাঠিয়ে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চায়। অন্যদিকে এফআরসি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএবি) আহমদ অ্যান্ড আখতারের বিষয়টি পুনর্নিরীক্ষার নির্দেশ দেয়। আইসিএবি নিরীক্ষকের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠালেও আহমদ অ্যান্ড আখতারের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সহযোগিতা না পেয়ে এফআরসিকে জানায়, আইসিএবির পক্ষে পুনর্নিরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। অবশ্য পরবর্তীতে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে আইসিএবিকে চিঠি দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়।

কপারটেকের তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয়া নিয়ে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের মধ্যে মতানৈক্য তৈরি হয়। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) পর্ষদ কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও ডিএসই কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরো কিছুদিন সময় নেয়। তারা এ বিষয়ে বিএসইসির মতামত জানতে চায়। অবশ্য এর মধ্যেই কপারটেকের আইপিও লটারিতে বরাদ্দ পাওয়া শেয়ারসংশ্লিষ্ট শেয়ারহোল্ডারদের বিও অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়।

বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের পর কপারটেককে তালিকাভুক্ত করার জন্য ডিএসইকে ১০ কার্যদিবস সময় দেয় বিএসইসি। ২৪ জুলাই এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে ডিএসইর কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়। এর আগে লিস্টিং রেগুলেশনের ৫(৩) ধারার বিধান থেকে অব্যাহতি চেয়ে কমিশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল ডিএসই। এ বিধান অনুসারে, আইপিও সাবস্ক্রিপশন শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যে গরমিল থাকার অভিযোগ উঠলে বিষয়টি পর্যালোচনা করতে গিয়ে নির্ধারিত সময়ে মধ্যে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিতে পারেনি ডিএসই। অবশেষে কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার কপারটেককে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয় ডিএসই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন