খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। দায়িত্ব পালন করছেন এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে। এর আগে কাজ করেছেন বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ায় সিটিব্যাংক এনএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিটি কান্ট্রি অফিসার হিসেবেও। অভিজ্ঞ এ ব্যাংকার সম্প্রতি কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন হাছান আদনান
একসময় বিদেশী ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী ছিলেন। এখন দেশী ব্যাংকের এমডি পদে আছেন। দুটি ধারার ব্যাংকের মধ্যে ভিন্নতা কেমন দেখছেন?
দুই ধারার ব্যাংকের মধ্যে মৌলিক তফাত কমপ্লায়েন্স পরিপালনে। আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংকে যোগদানের মাধ্যমে আমার ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। এরপর বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ায় সিটিব্যাংক এনএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও হয়েছে। এসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখেছি, বহুজাতিক ব্যাংকগুলো যেকোনো ছোটখাটো ত্রুটিকেও বড় করে দেখে। অভ্যন্তরীণ সুশাসন নিশ্চিত করা ও ব্যাংকিং রীতিনীতি পরিপালনে তারা খুবই সতর্ক। আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তবে ইদানীং বেসরকারি খাতের ব্যাংকে কমপ্লায়েন্সের সংস্কৃতি বেড়ে উঠেছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে হলে রীতিনীতি মেনে চলায় অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। অন্যথায় গ্রাহক আস্থা হারিয়ে বিলীন হতে বাধ্য।
বিদেশী ব্যাংকে দীর্ঘদিনের কাজের অভিজ্ঞতা দেশী ব্যাংকে কতটুকু লাগাতে পারছেন?
২০১৮ সালের এপ্রিলে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আমি যোগদান করি। সে হিসেবে এক বছরের বেশি সময় চতুর্থ প্রজন্মের একটি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে কেটেছে। এ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে সময়টি হয়তো অল্প, কিন্তু অর্জন অনেক। একেবারে নবীন একটি ব্যাংকে কাজ করতে এসে আমি নতুন করে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজের পরিধি অনেক বড়। এখানে এসে সব ধরনের গ্রাহক ও কাজের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছি। এ সময়ে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগও বেশি হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে মানুষের সুখ-দুঃখের গল্পের অংশীদার হতে পেরেছি। দীর্ঘদিন বিদেশী ব্যাংকে কাজ করার অভিজ্ঞতার সঙ্গে দেশী ব্যাংকের কার্যক্রমের সমন্বয় করতে পেরে আমি আনন্দিত। এনআরবিসি ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফল এনআরবি (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশী) ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে এনআরবিসি ব্যাংক পাচ্ছে বিভিন্ন দেশের বেস্ট প্র্যাকটিস-সমৃদ্ধ দিকনির্দেশনা। একই সঙ্গে আমূল পরিবর্তন এসেছে ব্যবস্থাপনার কালচারে। দুই পক্ষের প্রচেষ্টায় এনআরবিসি একটি কমপ্লায়েন্ট ব্যাংক হিসেবে দাঁড়াতে পেরেছে।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ঋণ কতটুকু সুরক্ষিত আছে, বিতর্কিত ঋণগুলোর বর্তমান অবস্থা কী?
গ্রাহকদের আমানতের সুরক্ষা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য যেকোনো ঋণ প্রস্তাবের যথাযথ মূল্যায়ন করে তবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। সেসব গ্রাহককেই আমরা ঋণ দিচ্ছি, যারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে সচেষ্ট। পর্ষদ বা অন্য কোনো পক্ষের তদবির কিংবা চাপে পড়ে আমরা ঋণ বিতরণ করছি না। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষই গ্রাহকের যোগ্যতার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে ঋণের নতুন শ্রেণীকরণের আগাম আশায় কিছু গ্রাহক নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করেনি।