জিডিপির সীমাবদ্ধতা, অর্থনীতির কাঠামো বদল ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

হুমায়ুন কবির

অর্ধশতক ধরে উন্নয়নের পথ হিসেবে পুরো বিশ্ব, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি সংকীর্ণ সংজ্ঞা ব্যবহার করে আসছে। যেখানে প্রবৃদ্ধিই চূড়ান্ত লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে হারিয়েছে উন্নয়নের প্রকৃত অর্থ। পারিসংখ্যানিক উল্লম্ফনের একটি চূড়ান্ত লক্ষ্যের বিপরীতে উন্নয়নকে মানবিকতা ও প্রতিবেশ ব্যবস্থার অস্তিত্বের উন্নত অবস্থার দিকে যাত্রার একটি প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা উচিত বলে মনে করি।

সন্দেহ নেই, বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে বৃহত্তর কল্যাণের ধারণা উল্লিখিত উন্নত অবস্থার সঙ্গে ভালোভাবে খাপ খায়। একটি ভালো, উন্নততর, উপভোগ্য ও সন্তোষজনক জীবন কেবল শিল্প উৎপাদন সর্বোচ্চকরণের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব হবে না। এজন্য অবস্তুগত-পারমার্থিক কিছু বিষয়ও চাই। উপরন্তু সামাজিক সম্পর্ক ও পরিবেশগত ভারসাম্যের (যার ওপর কল্যাণ অনেকটাই নির্ভর করে) অবনতি ঘটিয়ে এসব উৎপাদন সহজেই মানুষের কল্যাণ হুমকিতেও ফেলতে পারে।

প্রশ্ন হলো, সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিতে আমরা কীভাবে অর্থনীতিকে ঢেলে সাজাব? নিজেদের কল্যাণের সন্ধানে বহুদিনের প্রচলিত প্রবৃদ্ধিচালিত ধ্বংসাত্মক মডেলের চেয়ে ভালো কোনো উন্নয়ন প্রক্রিয়ার কীভাবে উন্নয়ন ঘটাতে পারি? সেটি করতে হলে অবশ্যই আমাদের বিদ্যমান সামাজিক সংগঠনগুলোকে নতুন করে বিন্যাস করতে হবে। আর তা করতে হবে রাজনৈতিক সংগঠন এবং বৃহত্তর অর্থে সমাজে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে পুরো অর্থনীতিকে পুনরায় ঢেলে সাজানোর মাধ্যমে। 

পরিচালন দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে অর্থনীতি হলো একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি। এখানে অনেক সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় থাকে। সেদিক থেকে অর্থনৈতিক নীতিগুলো মানব আচরণ নিয়ন্ত্রণ, প্রণোদনার সংজ্ঞায়ন এবং সামষ্টিক পদক্ষেপের নির্দেশনা প্রদান করে। আলোচ্য নীতিগুলো সম্ভাব্যতা, গ্রহণযোগ্যতা ও পরিপালন নিশ্চিত করে। এদিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এ দুটি ব্যবস্থা একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। যেহেতু পৌনঃপুনিকভাবে অর্থনৈতিক নীতিগুলো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করে, সেহেতু সামাজিক শৃঙ্খলা বা সংহতি রক্ষায় অর্থনীতিকে যে কেউ একটি চূড়ান্ত নীতি প্রণয়নকারী ব্যবস্থা হিসেবে ভাবতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, উৎপাদক ও ভোক্তাদের মধ্যে দায়িত্ব বিভাজন, পণ্য ও সেবার বণ্টন আয়োজন, বিনিময়ের জন্য মুদ্রানীতি প্রণয়ন দ্বারা অর্থনীতি সামাজিক সংগঠনের বিচারকে পরিণত হয়। অর্থনীতির ভূমিকা ও নীতি এত ওতপ্রোতভাবে যুক্ত যে এমনকি একটি সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি ছাড়াও সহজেই সমাজ-রাষ্ট্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখা যায়। কাজেই আমরা যদি সফলতার সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতিগুলো পরিবর্তন করতে পারি তাহলে রাজনৈতিক ও সামাজিক উভয়ভাবে সমাজ পুনর্গঠনের প্রকৃত সুযোগ পেতে পারি।     

আমাদের সামাজিক সংগঠনের বিদ্যমান মডেলকে—যেখানে অর্থনীতি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক—বর্ণনা করা হয় একটি উল্লম্ব কাঠামো হিসেবে। আলোচ্য কাঠামোয় মনে করা হয়, প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজের শীর্ষমহলের (পড়ুন ধনিকগোষ্ঠী) অর্জিত সম্পদ সমাজের নিচের অংশে চুইয়ে পড়বে। উৎপাদন ও ভোগের স্বতন্ত্র ভূমিকা ভোক্তাকে ফেলে দেয় প্রবৃদ্ধি প্রক্রিয়ার একেবারে শেষপ্রান্তে। এ মডেল শক্তিশালী হয় প্রাধান্যশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পরিমাপক দ্বারা। আর তা হলো, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)। এর পারিসংখ্যানিক ডিজাইনের মাধ্যমে জিডিপি উৎপাদন ও সম্পদের খুবই সংকীর্ণ সংজ্ঞা গ্রহণ করে, যা অন্যায্যভাবে বিভিন্ন ধরনের সম্পদপ্রবাহ ও মজুদকে সীমিত করে কেবল অর্থনৈতিক মূল্যের নিরিখে। উদাহরণ দেয়া যাক, জিডিপির মানদণ্ডে উল্লম্ব অর্থনীতি জাতীয় আয়ে শুধু আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে স্বীকৃতি দেয়। অন্যদিকে তথাকথিত অনানুষ্ঠানিক ও অর্থবহির্ভূত অর্থনীতির অনেক কিছু উপেক্ষা করে।

জিডিপি কেবল ‘দামযোগ্য’ উৎপাদন (বৃহত্তর অর্থে) পরিমাপের কারণে উল্লম্ব অর্থনীতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির বিনিময়ে বৃহৎ করপোরেশনের নৈপুণ্যে অতি জোর দেয়, বাজার দামে হয়তো যাদের উৎপাদন মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম। ব্যয়সাশ্রয়ী হিসেবে চিত্রায়ণের মাধ্যমে ইকোনমি অব স্কেলের লাভ করতে গিয়ে এটি অতি উৎপাদন ও পরিবেশগত বিপর্যয়কে উপেক্ষা করে, যদিও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হিসাবে যা মোটেই বাদযোগ্য নয়। এদিকে মালিকানা নিশ্চিত ও উত্তোলন করা না হলে উল্লম্ব অর্থনীতিতে প্রাকৃতিক সম্পদের কোনো মূল্য নেই। উন্নয়নে অবদান রাখতে প্রকৃতিকে ওপর-নিচ নিয়ন্ত্রণ (আদর্শগতভাবে উৎপাদন সর্বোচ্চকারী বড় কোনো কোম্পানি দ্বারা) করতে হবে এবং বাজার চ্যানেলের মাধ্যমে সেটিকে অবশ্যই বাণিজ্যিকীকরণ করতে হবে। উল্লম্ব অর্থনীতি প্রতিবেশ ব্যবস্থার কল্যাণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংরক্ষণ কিংবা সবার ভালোর জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবস্থাপনা কোনোটিই বিকাশে সহায়তা করে না।

উল্লম্ব অর্থনীতির সহায়ক নীতিগুলো রাস্তার ফেরিওয়ালা, ক্ষুদ্র কৃষি, স্থানীয় বাজার, ছোট পারিবারিক ব্যবসা এবং মজুরিবিহীন উৎপাদনশীল কাজের মতো অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থাগুলো ধ্বংস করে। তার পরিবর্তে সমর্থন জোগায় শপিংমল, বৃহৎ খামার কৃষি এবং বড় অবকাঠামো প্রকল্পগুলোকে। সামাজিক ও পরিবেশগত ক্ষতি সত্ত্বেও অর্থনীতির তথাকথিত ভালোর স্বার্থে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিকীকরণ হয়। এ ধরনের অর্থনীতিতে বৃক্ষ রোপণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ায় না কিন্তু গাছ কাটা ও বিক্রি তা বাড়ায়। এ ব্যবস্থার অধীনে কেবল অল্পসংখ্যক মানুষই আর্থিক সম্পদ সৃষ্টি থেকে সুবিধা নিতে পারে, অধিকাংশই পড়ে থাকে পেছনে।

উল্লম্ব অর্থনীতিতে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী পেছনে পড়ে থাকার অবশ্য দুটি প্রধান কারণ বিদ্যমান। প্রথমত, ওপর-নিচ ব্যবস্থাপনা সংজ্ঞাগতভাবে গুটিকয়েক দ্বাররক্ষকেই সীমাবদ্ধ। দ্বিতীয়ত, সর্বজনের উন্মুক্ত সম্পদগুলো মালিকানা নিয়ন্ত্রণের অধীনে আনার কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলোর আগের মতো তাতে আর অভিগম্যতা থাকে না। ফলে অসমতা বা বৈষম্য বাড়ে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) ক্রমবর্ধমান অসমতা ও বিশ্বজুড়ে উল্লম্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এ প্রভাব আফ্রিকা ও এশিয়ায় বেশি দৃশ্যমান, যেখানে আনুষ্ঠানিক অর্থনীতি অনেক দরিদ্র পরিবারকে একটি মৌলিক নিরাপত্তাবেষ্টনী প্রদান করে। সঠিক নীতি, প্রগতিশীল করায়ন এবং সম্পদের পুনর্বণ্টনমূলক প্রক্রিয়ার অনুপস্থিতিতে কীভাবে আষবৈষম্য বৃদ্ধি পায়, দুই শতকের অধিক সময়ের কালক্রমিক তথ্য দিয়ে ফরাসি অর্থনীতিবিদ তমা পিকেটি তা দেখিয়েছেন। কাজেই তথাকথিত ‘চুইয়ে পড়া প্রভাবের’ বাস্তবতা—বিশ শতকের অর্থনৈতিক নীতিগুলোর সামাজিক প্রভাব তৈরিতে বহুল ব্যবহূত উল্লম্ব অর্থনীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য—একুশ শতকের কঠিন তথ্যের লিটমাস টেস্টে পাস করে না।

সেক্ষেত্রে আমাদের নতুন ধরনের অর্থনৈতিক পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ার উন্নয়ন করতে হবে। বিনির্মাণ করতে হবে নতুন ধরনের অর্থনীতিও। ভবিষ্যতে সর্বজনের কল্যাণ উন্নয়নে বিন্যস্ত কোনো অর্থনীতিকে অবশ্যই অভিযোজনমূলক, সমন্বয়মূলক এবং ক্ষমতায়িত হতে হবে। অভিযোজনমূলক এজন্য যে গতানুগতিক উল্লম্ব কাঠামো পরিহার করে নতুন অর্থনীতি পরিচালিত হবে একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। সমন্বয়মূলক এজন্য যে এটি বৃহত্তর পরিসরের মধ্যে উৎপাদন ও ভোগ পদ্ধতি চিহ্নিত করবে। আবার ক্ষমতায়িত এজন্য যে ভোক্তার পরোক্ষ ভূমিকা পালনের পরিবর্তে আলোচ্য অর্থনীতির ব্যবহারকারীরা নিজেরাই কর্তৃত্ব নেবে।

পরিবেশগত বিপর্যয়, বর্ধিষ্ণু অসমতা, গণঅভিবাসন, সম্পদ বিলোপসহ বিভিন্ন সংকটের সন্ধিক্ষণ বিদ্যমান অর্থনৈতিক মডেলের অস্থায়িত্বশীলতা ও সার্বিক অকার্যকারিতা স্পষ্ট করছে। এ বাস্তবতায় আমাদের পরিবর্তনের প্রধান চাবি লুকিয়ে আছে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয়, স্থিতাবস্থা কাটিয়ে যেটি নিচ-ওপর ব্যবসায়িক মডেলের পথ প্রশস্ত করবে। অর্থনীতি নীতি প্রণয়নকারী ব্যবস্থা হওয়ায় প্রভাব ফেলার সর্বোত্তম সুযোগটা আসে কিছু প্রধান নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে। এভাবে অর্থনীতিকে নতুন পথপরিক্রমায় মোড় ঘোরানো যায়। সময়ান্তরে জিডিপির সীমাবদ্ধতা পরিষ্কার হয়েছে। এখন বৈশ্বিক এজেন্ডায় ‘বিয়ন্ড জিডিপি’ বিতর্ক গুরুত্ব পাচ্ছে। জাতিসংঘ, ওইসিডি, বিশ্বব্যাংক, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কিছু দেশের জাতীয় সরকার আলোচ্য বিতর্কে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে, হচ্ছে। চলমান এসডিজি লক্ষ্যমাত্রাকে বৈশ্বিক পর্যায়ে এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের অন্তত একটি সূচনা বিন্দু বলা যায়। বিয়ন্ড জিডিপি আন্দোলন সম্পর্কে অধিক মানুষ সচেতন হওয়ায় বিভিন্ন দেশের তৃণমূল পর্যায়েও সামাজিক চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। চাপ অব্যাহত থাকলে পরবর্তী দশকেই মৌলিক পরিবর্তন আশা করা যায়।

আদর্শিকভাবে মানবিক ও প্রতিবেশগত কল্যাণের প্রধান দিকগুলো একীভূতকরণে সমর্থ সূচকগুলো দ্বারা জিডিপি প্রতিস্থাপন হওয়া উচিত। এই একীভূতকরণ খুব যত্নসহকারে করতে হবে, যাতে আর্থিক ও অ-আর্থিক উভয় পরিমাপকের সমন্বয় ঘটে। এজন্য নতুন আর্থিক ইউনিট বা নির্ণায়ক প্রয়োজন, যে ইউনিট ইকোসিস্টেম ও পরিবারের অবদানকেও অর্থনৈতিক সাফল্যে মূল্যবান মনে করবে। সব মিলিয়ে আমাদের একটি কল্যাণ অর্থনীতির দিকে যেতে হবে।

জিডিপি কাঠামোয় আরোপিত উৎপাদন ও সম্পদ সীমানা থেকে একটি কল্যাণ অর্থনীতির উৎপাদন ও সম্পদ সীমানা ব্যাপকভাবে ভিন্নতর। পূর্বোক্ত কাঠামোয় যেখানে কেবল স্বত্বাধিকারীর প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের অধীন সম্পদ ও উৎপাদন সক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়, সেখানে কল্যাণ অর্থনীতি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাহ্যিকতার (ইতিবাচক ও নেতিবাচক) প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে একটি সামগ্রিক অ্যাপ্রোচ গ্রহণ করে। এটি বৃহত্তর ভালোরও (কেবল সুনির্দিষ্ট কারো ভালো নয়, পুরো বায়ুমণ্ডলের) মূল্য দেয়, যা মানবিক ও পরিবেশ-প্রতিবেশগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

সন্দেহ নেই, রূপান্তরমূলক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, গণঅভিবাসন এবং বর্ধমান বৈষম্য দ্বারা সৃষ্ট পদ্ধতিগত সংকট বৈশ্বিক, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার গভীরতর পুনর্বিন্যাস দাবি করে। পুনর্বিন্যাসের এ প্রক্রিয়া অবমুক্ত করার চাবি লুকিয়ে আছে নির্ণায়ক বা পরিমাপক কাঠামোয়, যা দ্বারা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হয়। জিডিপিভিত্তিক বিদ্যমান কাঠামো বিশেষজ্ঞ, সাধারণ নাগরিক, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন দেশের জাতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দ্বারা অব্যাহতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। বাংলাদেশও এ চিন্তাপ্রবাহের বাইরে নয়। এখানেও অর্থনীতিবিদদের একটি গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন মহল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মাপার বিদ্যমান কাঠামো ও উন্নয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। একচোখাভাবে বিদ্যমান প্রক্রিয়া জারি রাখলে হবে না। জিডিপির পারিসংখ্যানিক উল্লম্ফনের বাইরে মানুষের মানবিক ও প্রতিবেশগতসহ নানা মাত্রার অ-আর্থিক মূল্য অর্থনৈতিক নির্ণায়ক পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্তকরণের সময় এসেছে। এটি করা সম্ভব হলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি যেমন টেকসই হবে, তেমনি দেশ তথা ধরিত্রীর বৃহত্তর কল্যাণও নিশ্চিত হবে।

 

হুমায়ুন কবির: সাংবাদিক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন