মিরসরাই ও ফটিকছড়িতে গোলমরিচ চাষে ভাগ্যবদলের হাতছানি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, মিরসরাই

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ও স্বাবলম্বিতার লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও ফটিকছড়িতে মসলাজাতীয় ফসল গোলমরিচ চাষের প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অপকা (অর্গানাইজেশন ফর দ্য পুওর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্ট)। এরই মধ্যে এ দুই উপজেলায় ২০টি দরিদ্র পরিবারকে গোলমরিচের বাগান তৈরিতে সহযোগিতা করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে আমদানিনির্ভর ফসলটির আবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে তাদের ভাগ্যবদলের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে।

মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের কয়লামুখ এলাকায় অনাবাদি পাহাড়ি ঢালু জমিতে গোলমরিচের বাগান করেছেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষও। এমনই দুজন নারী- মালতী ত্রিপুরা ও ময়ূরী রানী ত্রিপুরা। তারা ২৫ শতাংশ পাহাড়ি জমিতে গোলমরিচের দুটি ক্ষেত করেছেন।

তারা জানান, তাদের ক্ষেতে ১২৫টি করে পাকা খুঁটি রয়েছে। প্রতিটি খুঁটিতে গোলমরিচের চারা রোপণ করা হয়েছে চারটি করে। এরই মধ্যে চারাগুলো বড় হয়ে খুঁটি জড়িয়ে উপরে উঠে গেছে। আসতে শুরু করেছে ফুল ও ফল। আর এ বাগান তৈরিতে জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) মাধ্যমে তাদের আর্থিক সহযোগিতা করেছে স্থানীয় এনজিও সংস্থা অপকা। আর সার্বিক সহযোগিতা করছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।

মালতী ত্রিপুরা বলেন, তার ক্ষেতে গোলমরিচের লতায় এরই মধ্যে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে, চলতি বছরের শেষ দিকে তিনি শুকনা গোলমরিচ বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

অপকার ভেল্যুচেঞ্জ ফ্যাসিলিটি কর্মকর্তা ও গোলমরিচ চাষ প্রকল্পের সমন্বয়ক গৌতম বিশ্বাস বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে গোলমরিচ চাষের এ পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে মিরসরাই ও ফটিকছড়ির ২০টি গরিব পরিবারকে গোলমরিচ চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার প্রক্রিয়া চলছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পাহাড়ের ঢালু অনাবাদি জমিতে গোলমরিচের একটি ক্ষেত চাষ করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ টাকা। একটি ক্ষেতের জন্য ১২৫টি পাকা খুঁটি প্রয়োজন। এসব খুঁটির প্রতিটির দাম পড়ে ৪০০ টাকা। একটি খুঁটিতে গোলমরিচের চারটি চারা রোপণ করতে হয়। আর প্রতিটি চারার দাম ৫০ টাকা। চারা রোপণের তিন বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। ফল পাওয়া যায় টানা ১৫-১৮ বছর। প্রতিটি খুঁটি থেকে বছরে শুকনো গোলমরিচ পাওয়া যাবে দেড় থেকে দুই কেজি। এভাবে ১২৫টি খুঁটির ৫০০টি গাছ থেকে প্রায় ২৫ কেজি বিক্রয় উপযোগী গোলমরিচ পাওয়া যাবে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এছাড়া গোলমরিচের চারা বিক্রি করেও বাড়তি আয় করা সম্ভব। একই সঙ্গে গোলমরিচের ক্ষেতে হলুদ ও আদার সমন্বিত চাষও সম্ভব। এদিকে ২৪ জুলাই গোলমরিচের এ ক্ষেত পরিদর্শনে আসেন বিশ্বব্যাংকের দুই প্রতিনিধি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন