খুলনায় উপকূলীয় পানি সম্মেলন সমাপ্ত : উপকূলীয় এলাকার প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে

বণিক বার্তা প্রতিনিধি খুলনা

১৩ দফা খুলনা ঘোষণার মাধ্যমে গতকাল শেষ হয়েছে ‘দ্বিতীয় উপকূলীয় পানি সম্মেলন’। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে গত বৃহস্পতিবার দুই দিনব্যাপী এ পানি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনের সমাপনী দিনের প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন্নাহার এমপি। তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে খুলনা তথা সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার ভৌগোলিক, পরিবেশ ও প্রতিবেশগত পার্থক্য রয়েছে। জলবায়ুগত পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন এ উপকূলীয় এলাকা। তবে এ অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকটটি সবচেয়ে প্রকট।

পরিবেশ উপমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুগত পরিবর্তনের ক্ষতির হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবে সমস্যার বাস্তবতায় খুলনা উপকূলীয় অঞ্চল যেহেতু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে, তাই এ এলাকার সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে নজর দেয়া হচ্ছে। এ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেন তিনি।

সমাপনী দিনের প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. খায়রুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ভিশনের নবযাত্রা প্রকল্পের চিফ অব পার্টি রাকেশ কটাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ওয়ার্ল্ড ভিশনের মো. নূরুল আলম রাজু।

দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক সাধন রঞ্জন ঘোষ, বিশিষ্ট গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব শ্যামল দত্ত। ১৩ দফা খুলনা ঘোষণা পাঠ করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার দত্ত। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পানি অধিকার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবীর ববী।

উপকূলীয় পানি সম্মেলনে খুলনা ঘোষণার ১৩ দফার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পানিকে শুধুই সম্পদ বিবেচনা না করে প্রতিবেশের একটি মৌলিক উপাদান বিবেচনায় নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের সব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা, উপকূলীয় এলাকার সংবেদনশীল প্রাতিবেশিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যমান পানি সংকট নিরসনে প্রাজন্মিক সমাধানে স্বতন্ত্র নীতিমালা প্রণয়ন ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা, এ অঞ্চলের ভূ-উপরিস্থ পানির উৎসগুলো তথা প্রাকৃতিক এবং রাষ্ট্রীয় জলাধারগুলো (পুকুর, খাল ইত্যাদি) লিজ প্রদানের প্রথা বা আইন বাতিল করে এগুলো খাবার পানি, কৃষি-সেচ, ঘর-গেরস্থালির ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা, উপকূলীয় অঞ্চলের সামগ্রিক পানি ব্যবস্থাপনা, জোয়ার-ভাটাপ্রবাহ, পরিবেশ-প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য, উপকূলীয় জীবন-জীবিকা এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিবেচনায় নিয়ে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে লোকজজ্ঞান ও স্থানীয় মানুষের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ও সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে এ অঞ্চলের পানিপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি ও পরিবেশ-প্রতিবেশগত ক্রিয়া-বিক্রিয়া বিবেচনায় আনা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন