চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রস্তুতি : আরো ২১০ কোটি পাউন্ড তহবিল ঘোষণা যুক্তরাজ্যের

বণিক বার্তা ডেস্ক

চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের প্রস্তুতির জন্য যুক্তরাজ্য সরকার আরো ২১০ কোটি পাউন্ড তহবিল গড়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে ব্রেক্সিট প্রস্তুতির পূর্বঘোষিত তহবিল বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। এদিকে ১০টি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ঘোষণার পরিকল্পনা করছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নতুন বরাদ্দকৃত তহবিল সীমান্ত অঞ্চলের বিভিন্ন অফিসে ও বাণিজ্য অঞ্চলে আরো জনবল এবং প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য ব্যয় করা হবে। কেন্ট বন্দর পরিবহন ব্যবস্থা সহজ এবং সীমান্ত অঞ্চলের যানজট কমাতে বরাদ্দকৃত অর্থের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় করা হবে। এদিকে অবিরাম সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে ওষুধের মজুদ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাহায্য করতে জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়নেরও কথা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে চ্যান্সেলর সাজিদ জাভিদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগ করতে যুক্তরাজ্যের এখনো ৯১ দিন সময় হাতে রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ইইউ ত্যাগের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করাই আমাদের মুখ্য বিবেচনা। এ সময়ের মধ্যে আসলে আমাদের ব্রেক্সিটের জন্য প্রস্তুত হয়ে যেতে হবে।

এ কর্মকর্তা বলেন, ইইউর সঙ্গে আমরা একটি সুবিধাজনক চুক্তিতে পৌঁছতে চাই, যা অগণতান্ত্রিক যেকোনো ধরনের সম্ভাবনা ঠেকাতে পারবে। আমরা যদি সুবিধাজনক কোনো চুক্তিতে পৌঁছতে না পারি, তাহলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটই আমাদের একমাত্র নিয়তি। এজন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। চুক্তিসহ কিংবা চুক্তিহীন যা-ই হোক, ৩১ অক্টোরব আমরা যে ব্রেক্সিটের জন্য প্রস্তুত, তা নিশ্চিত করার জন্যই অতিরিক্ত ২১০ কোটি পাউন্ড তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে। 

এদিকে বিরোধী লেবার পার্টির ব্রেক্সিটের ছায়া চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেল ব্রেক্সিট প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের বিষয়টিকে করদাতাদের অর্থ শুধু শুধু নষ্ট করা বলে অভিযোগ করেছেন। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানো সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের খায়েশ মেটাতেই সরকার চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের দিকে এগোচ্ছে এবং এজন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা। এ চ্যান্সেলর বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানো যেত। ২১০ কোটি পাউন্ড চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রস্তুতির জন্য ব্যয় না করে দেশের স্কুল, হাসপাতাল ও জনকল্যাণে ব্যয় করা যেত। লেবার পার্টিকে যুক্তরাজ্যের সর্বস্তরের পার্টি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কিংবা ব্রেক্সিট বিপর্যয় ঠেকাতে লেবার পার্টি প্রয়োজনীয় সব রকমের পদক্ষেপ নেবে।

এদিকে ব্রেক্সিট-পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ১০টি বন্দর বা মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ঘোষণার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্য সরকার। যুক্তরাজ্যজুড়ে এসব বন্দর দিয়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম কর বা শুল্কে পণ্য আমদানি-রফতানি করা যাবে। ২০১২ সালেও দেশটির এ রকম কিছু অঞ্চল ছিল। ব্রেক্সিট উপলক্ষে নতুন সৃষ্ট ১০টি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল কর্মসংস্থান বাড়াবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে এ পদক্ষেপের ফলে নতুন বিনিয়োগের কোনো সম্ভাবনা নেই এবং এমন পদক্ষেপ ঋণদাতা ও কর ফাঁকিদাতাদের উসকে দিতে পারে বলে জানিয়েছে লেবার পার্টি।

স্থলবন্দরের পাশাপাশি সমুদ্র ও বিমানবন্দর মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল হিসেবে ব্যবহূত হবে। ইইউর অনুশাসনেই এ ধরনের মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ঘোষণার অনুমোদন রয়েছে। মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল থেকে দেশটির বড় ধরনের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এ সিদ্ধান্তের সমর্থকরা।  

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন