দুধের ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) আটটি দুধের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা করেছে। এসব নমুনা ভারতের চেন্নাইতে এসজিএস আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাদের ফলাফল পাওয়া ও বিএআরসির ফলাফল একই। পাস্তুরিত ও অপাস্তুরিত যে আটটি দুধ (মিল্ক ভিটা, আড়ং, ফার্ম ফ্রেশ, ঈগলু, আরডি, সাভার ডেইরি ও প্রাণ) নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে, তা মানুষের জন্য ক্ষতিকর কোনো পদার্থ পাওয়া যায়নি। বাকি যে ছোট-বড় দুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান-ব্যক্তি রয়েছে, তাদের দুধের তেমন ক্ষতিকর কিছু নাও থাকতে পারে, তবে পর্যায়ক্রমে সব দুধের নমুনা পরীক্ষা করে এর ফলাফল সবাইকে জানানো হবে।

বুধবার কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি তার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পুষ্টি ইউনিট, বিএআরসি কর্তৃক অ্যান্টিবায়োটিক, সালফা ড্রাগ ও ভারী ধাতুর উপস্থিতি বিশ্লেষণ ফলাফল নিয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা আমাদের চ্যালেঞ্জ। সহজলভ্য পুষ্টির মধ্যে রয়েছে দুধ। এখন গ্রামের মানুষ তেমন দুধ খায় না, বাজারে বিক্রি করে দেয়। সরকারের সদিচ্ছা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে আজ দেশে দুধের উৎপাদন অনেক বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দুধের মধ্যে ভারী ক্ষতিকর ধাতুর অস্তিত্বের যে খবর সব জায়গায় ছেয়ে গেছে, তা সম্পূর্ণ সত্য নয়।  যারা এ তথ্য প্রকাশ করেছে, তাদের গবেষণার সে সক্ষমতা নেই। তাই দুধের ব্যাপারে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ড. রাজ্জাক বলেন, বিগত বছরগুলোতে ফল, সবজি, মাছসহ খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন প্রয়োগ করা হয় বলে ব্যাপকভাবে প্রচার চালিয়েছে। এতে মানুষের মধ্যে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। ফলে আর্থিক ক্ষতিসহ বৈদেশিক বাজারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং হচ্ছে। পরীক্ষাগারে এসব দুধ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কোনো দুধেই কোনো প্রকার ভারী ধাতু যেমন—লিড ও ক্রোমিয়ামের রেসিডিউ/অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়নি। কোনো প্রকার সালফা ড্রাগের রেসিডিউ/অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায়নি। শুধু একটি নমুনায় Chlorampheenicol-এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে প্রতি কেজিতে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ মাইক্রোগ্রাম। কারো কারো মতে শূন্য দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য। গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উৎপাদিত বাজারজাতকৃত দুধপানে কোনো প্রকার স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বিএআরসি হচ্ছে গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের এপেক্স বডি। খাদ্যসহ যেকোনো প্রকার আতঙ্ক বা বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে শিগগিরই দেশে অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিং সঞ্চালন করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান। এছাড়া বিএআরসির চেয়ারম্যান কবির ইকরামুল হকসহ মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ আধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন