চলচ্চিত্রে অনুদান বিষয়ে উচ্চ আদালতের রুল জারি

রুলের জবাব দিতে আদালত তথ্য মন্ত্রণালয়কে চার সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন

ফিচার প্রতিবেদক

২০১৮-১৯ অর্থবছরের তিনটি প্রজ্ঞাপনে ১৪টি চলচ্চিত্রকে দেয়া সরকারি অনুদানের ঘোষণা কেন অবৈধ হবে না এবং চলচ্চিত্র অনুদানের পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য নীতিমালা অনুযায়ী ওই অর্থবছরের সব চলচ্চিত্রের প্যাকেজ প্রস্তাব কেন পুনর্নিরীক্ষা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলের জবাব দিতে আদালত তথ্য মন্ত্রণালয়কে চার সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন। চারজন চলচ্চিত্রকর্মীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় এ রুল জারি করেন বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চ।

অনুদান নীতিমালা লঙ্ঘন করে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চলচ্চিত্র অনুদানের ঘোষণা স্থগিত এবং জমাকৃত সব চলচ্চিত্র নির্মাণ প্যাকেজ প্রস্তাব পুনর্নিরীক্ষণের জন্য গত ১৬ জুলাই উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন এ বছর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের জন্য আবেদনকারী ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের জন্য আবেদনকারী অদ্রি হূদয়েশ এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা সুপিন বর্মণ ও খন্দকার সুমন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনি সহায়তা প্রদান করছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম।

আদালতের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আবেদনকারী চার নির্মাতা। এর অন্যতম আবেদনকারী ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন টকিজকে বলেন, ‘আমরা খুশি যে হাইকোর্ট আমাদের আবেদন বিবেচনা করেছেন এবং তারা মনে করেছেন যে অনুদানের এ প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ ও বাতিল হওয়া উচিত। এ বছর অনুদান দেয়ার বিষয়টিও তদন্ত করা উচিত। আমরা চাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ প্রজ্ঞাপন বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিকভাবে ব্যবস্থা নেবে।’ জাহাঙ্গীরের কাছে পরের প্রশ্ন, আপনারা কি মনে করেন, শুধু এ বছরের প্রজ্ঞাপন নয়, সরকারি অনুদান দেয়ার ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যেই ভুল আছে, এজন্য এরও সংশোধন জরুরি? ‘আমরা এটা মনে করি বলেই আবেদনে দাবি করেছি বিষয়টির পুনরায় তদন্ত হোক। আসলেই পুরো পদ্ধতিই অস্বচ্ছ। এটি স্বচ্ছ হওয়া উচিত। আবেদনকারী সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গভাবে খোঁজখবর নিয়ে, মেধাক্রম দেখে সঠিক উপায়ে অনুদান দেয়া হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করি’—বলেন জাহাঙ্গীর হোসেন।&dquote;&dquote;

রুলে উন্নত মানের পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা, ২০১২ (সংশোধিত) এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা, ২০১২ (সংশোধিত) লঙ্ঘন করে তিন দফায় ১৪টি চলচ্চিত্রে অনুদানের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না এবং ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

চার সপ্তাহের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উপসচিব, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য সচিব ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত ৯ এপ্রিল এক প্রজ্ঞাপনে তথ্য মন্ত্রণালয় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে পাঁচটি চলচ্চিত্রকে সরকারি অনুদানের সিদ্ধান্ত দেন। ২৪ এপ্রিল পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণে আটটি চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদানের সিদ্ধান্ত দেন। পরে ৯ মে আরো একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রকল্পকে অনুদানের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিশুতোষ শাখায় অনুদান পেয়েছে আবু রায়হান মো. জুয়েলের ‘নসু ডাকাত কুপোকাত’। প্রামাণ্যচিত্র শাখায় অনুদান পেয়েছে হুমায়রা বিলকিসের ‘বিলকিস এবং বিলকিস’ এবং পুরবী মতিনের ‘খেলাঘর’।

এছাড়া সাধারণ শাখায় কবরীর ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছাড়াও অনুদান পেয়েছে মীর সাব্বিরের ‘রাত জাগা ফুল’, আকরাম খানের ‘বিধবাদের কথা’, কাজী মাসুদের প্রযোজনায় এবং হোসনে মোবারক রুমির পরিচালনায় ‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া’, লাকী ইনামের প্রযোজনায় এবং হূদি হকের পরিচালনায় ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ এবং শমী কায়সারের প্রযোজনায় ‘স্বপ্ন মৃত্যু ভালোবাসা’।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন