শেয়ারবাজার
ঘরে বসে বীমা সুবিধা পেতে দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস চালু করেছে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে লগ ইন করে কিছু তথ্য দিয়ে নির্দিষ্ট পলিসি গ্রহণ করে বীমার আওতায় আসতে পারবেন যেকোনো গ্রাহক। প্রাথমিকভাবে ট্রাভেল ও স্বাস্থ্য বীমার জন্য চালু হওয়া এ পলিসির টাকা পরিশোধ করা যাবে যেকোনো ব্যাংকের ভিসা, ক্রেডিট কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। অনলাইনে ফরম পূরণ করলেই এজেন্টরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রাহকদের কাছে বীমার দলিলাদি পৌঁছে দেবেন।
গতকাল রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানিয়েছেন গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন, গ্রীন ডেল্টার উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসির এ চৌধুরী, আইডিআরের সদস্য গকুল চাঁদ দাসসহ আইডিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বীমা খাতসংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ফারজানা চৌধুরী বলেন, নন-লাইফ বীমার ক্ষেত্রে গ্রীন ডেল্টা দেশের অন্যতম বীমা কোম্পানি; যারা ট্রিপল এ রেটিং অর্জন করেছে। বাজারের শীর্ষ কোম্পানি হিসেবে আধুনিক যুগের সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম শুরু করেছে গ্রীন ডেল্টা। আমরা এরই মধ্যে সবচেয়ে ভালো আইটি ব্যবস্থাপনা দিয়ে ব্যবসার মডেলকে যুগোপযোগী করে সাজিয়েছি। এর অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল বীমা চালু করা হয়েছে। গ্রাহকরা যেকোনো জায়গায় বসে যেকোনো মুহূর্তে এ পলিসি খুলতে পারবেন।
ডিজিটাল ইন্স্যুরেন্সের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে গ্রীন ডেল্টার কোম্পানি সচিব সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমেদ বলেন, একজন গ্রাহক বিমানে ওঠার আগে অনলাইনে প্রবেশ করে ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। অনলাইনে তিনটি তথ্য দিলেই বিস্তারিত জানতে পারবেন। খুব সংক্ষেপে ফরম পূরণ করে পলিসির টাকা পরিশোধ করলেই তিনি অনলাইনে নিশ্চয়তার কাগজপত্র পেয়ে যাবেন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে। পলিসির জন্য নির্ধারিত টাকা যেকোনো ব্যাংকের ভিসা, ক্রেডিট ও মাস্টার কার্ড, বিকাশ, আইপেসহ যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। তবে আইপের মাধ্যমে পলিসির টাকা জমা দিলে ১৫ শতাংশ ক্যাশ ব্যাক পাবেন আইপে গ্রাহকরা। প্রাথমিকভাবে ট্রাভেল বীমার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বীমাও করা যাবে ডিজিটাল ইন্স্যুরেন্সে।
অনুষ্ঠানে শেখ কবির হোসেন বলেন, কোম্পানিগুলো বীমা দাবি ঠিকমতো পরিশোধ না করার কারণেই এখানে মানুষকে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করানো যায়নি। মূলত গ্রাম পর্যায়ে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর প্রতারণার মাশুল দিতে হচ্ছে সাধারণ বীমাকে। গত কয়েক বছরে সাধারণ বীমার কাজের স্বচ্ছতা অনেক বেড়েছে। ডিজিটাল বীমা চালুর মাধ্যমে বীমা সেবা গ্রাহকদের কাছে খুব সহজে পৌঁছানো যাবে। তবে বীমার কর্মকর্তাদের বীমাসংক্রান্ত জ্ঞান ও কারিগরি জ্ঞানসমৃদ্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইডিআরের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, বীমা করার পর দাবি ফেরত পাওয়া যায় না বলে বীমা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। বীমার নাম শুনলেই একটা সময় মানুষ প্রতারণার চিন্তা করত। আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছি। এখন সবাই কমবেশি দাবি পরিশোধ করছে। সব কোম্পানিই ম্যাচিউর হওয়া দাবির অধিকাংশ পরিশোধ করছে। যারা দাবি পরিশোধ না করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বীমা সেবায় আধুুনিকতার ছোঁয়া দিয়ে এটাকে এগিয়ে নিতে চাই। ডিজিটাল বীমা চালু হলে গ্রাহকরা নিজের হিসাব নিজেই ব্যবস্থাপনা করতে পারবেন।
পাঠকের মতামত