খবর
জাতীয় সংসদে গতকাল ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ বিল উত্থাপিত হয়েছে। এতে অবহেলা বা বেপরোয়া মোটরযান চালনার কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলে চালকের পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাণহানির দায়ে অভিযুক্ত ড্রাইভার ও কন্ডাক্টরের অপরাধ জামিনযোগ্য নয় বলেও বিলটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনাজনিত অন্যান্য অপরাধের আপস-মীমাংসার জন্য পুলিশকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২২তম অধিবেশনে গতকালের বৈঠকে বিলটি উত্থাপন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে সাতদিনের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বিলটি সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
বিলে বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি গণপরিবহনে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। শ্রম আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান চুক্তি ছাড়া কাউকে কন্ডাক্টর হিসেবে নিয়োগও দিতে পারবে না। গণপরিবহন পরিচালনার জন্য সরকারি গেজেটের ভিত্তিতে প্রতিটি মহানগর, বিভাগ ও জেলায় একটি করে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের প্রতিনিধি থাকবেন। কমিটি রুট পারমিট দেবে।
বিলে মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বার্ষিক কিংবা এককালীন চাঁদা আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। চাঁদার অর্থ মোটরযান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষতিপূরণ কিংবা চিকিৎসা খরচ বাবদ দেয়া হবে। এক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা তহবিল পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করবে সরকার। ট্রাস্টির চেয়ারম্যানকেও সরকারের পক্ষ থেকেই নিয়োগ দেয়া হবে। এটি হবে একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
বিলে অপরাধ, বিচার ও দণ্ড অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, পেনাল কোডের ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৮৯-এ ভিন্নতর কিছু না থাকলে সাব-ইন্সপেক্টর বা সমমর্যাদার কর্মকর্তা আদালতকে অবহিত করলে এ আইনের অধীন সব অপরাধ আমলযোগ্য হবে। তবে আইনের ৮৪, ৯৮ ও ১০৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধগুলো ছাড়া অন্য সব অপরাধ জামিনযোগ্য হবে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ কিংবা সমমর্যাদার কর্মকর্তারা এ আইনের ৬৬, ৭২, ৭৫, ৮৭, ৮৯ ও ৯২ ধারায় বর্ণিত অপরাধগুলো আপস-মীমাংসা করতে পারবেন। এছাড়া নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ ছাড়া পাবলিক প্লেসে মোটরযান চলাচলের জন্য অবৈধভাবে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না; করলে পেনাল কোডের অধীনে তা চাঁদাবাজির অপরাধ বলে গণ্য হবে।
পাঠকের মতামত