প্রথম পাতা, খবর

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে সরকার হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
দলীয় চেয়ারপারসনের অসুস্থতার কথা বারবার জানানোর পরও সরকার তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে মিথ্যা মামলায় শাস্তি দিয়ে কারাগারে বেআইনিভাবে আটক রেখে হত্যার হীন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেয়া হবে।
অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে গত সাত মাসে একবারও আদালতে হাজির করা সম্ভব না হওয়ায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার কাজ শেষ করতে কারাগারের ভেতরেই এজলাস বসানো হয়েছে। নতুন ওই এজলাসে গত বুধবার খালেদা জিয়াকে হাজির করা হয় হুইল চেয়ারে করে। আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন জানান, তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। বাঁ পা ঠিকমতো রাখতে পারেন না, বাঁ হাতেও ব্যথা। বিচারকের উদ্দেশে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেন, আপনার যতদিন ইচ্ছা সাজা দিন, আমি এ অবস্থায় বারবার আসতে পারব না।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা অনেকবার বলেছি, তাকে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরাও বলেছেন, তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে স্থানান্তর করে তাকে চিকিৎসা দেয়া তার জীবন রক্ষার জন্য অতি প্রয়োজন। এখন যে অবস্থায় তিনি আছেন, তাতে তার জীবন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় সব দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। বিশেষ করে সংবিধান লঙ্ঘন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাদের অভিযুক্ত হতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার পরিবারের সদস্যরা কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ফখরুল বলেন, তারা বলেছেন, দেশনেত্রী অত্যন্ত অসুস্থ। তার বাঁ হাত ও বাঁ পা প্রায় অবশ হয়ে গেছে। অসহ্য ব্যথা অনুভব করছেন। তিনি বলেছেন, তার কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। দেশের প্রচলিত আইনে কোনো অসুস্থ নাগরিককে চিকিৎসা না দিয়ে বিচারকাজ চালানো যায় না বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
কারাগারের ভেতরে আদালত বসানোর প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার তাকে আবার শাস্তি দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এটা স্পষ্ট, দেশনেত্রীকে রাজনীতি থেকে এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রেখে একতরফাভাবে নির্বাচনে নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করার নীলনকশা নিয়েই এ অপপ্রয়াস চালাচ্ছে সরকার।
এর আগে জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। ওই মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও অন্য মামলায় গ্রেফতার থাকায় তার মুক্তি মিলছে না। ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে ঢাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা। তবে গত এপ্রিলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতা গুরুতর কিছু নয়।
পাঠকের মতামত