শেষ পাতা, সাক্ষাৎকার

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের এমডি ও সিইও। আগে ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি। চলতি বছরের শুরু থেকে এবিবি চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও আছেন। ঢাকা ব্যাংক, এবিবি ও ব্যাংকিং খাতের গতিপথ নিয়ে কথা বলেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাছান আদনান
২৪ বছরে পদার্পণ করেছে ঢাকা ব্যাংক। দীর্ঘ এ পথচলায় ব্যাংকটির সবচেয়ে বড় অর্জন কী?
১৯৯৫ সালের ৫ জুলাই ঢাকা ব্যাংক যাত্রা করেছিল। দীর্ঘ পথচলার এ সময় ঢাকা ব্যাংক নিজেকে একটি উজ্জ্বল ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করাতে পেরেছে। গ্রাহকসেবায় আমাদের ব্যাংক অনন্যদৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সব বিধিবিধান মেনে চলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। ফলে ব্যাংকের অভ্যন্তরে কার্যকর সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুরু থেকেই ঢাকা ব্যাংক একটি আদর্শ পরিচলনা পর্ষদ পেয়েছে। পর্ষদ চায়, ঢাকা ব্যাংক ব্যাংকিং খাতের আদর্শ হোক। এছাড়া কর্মীরাও ব্যাংকের প্রত্যেকটি কর্মকাণ্ডে নিজ নিজ দৃষ্টান্ত রাখছে। এজন্য ঢাকা ব্যাংকের বিষয়ে বাজারে কোনো বদনাম নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণেও এখন পর্যন্ত এ ব্যাংকের বড় কোনো ত্রুটির কথা শোনা যায়নি। ২৩ বছরের পথচলায় উজ্জ্বল ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করাতে পারাটাই ঢাকা ব্যাংকের বড় অর্জন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা ব্যাংক কতটুকু সম্প্রসারিত হয়েছে?
এটি ঠিক, সমসাময়িক অনেক ব্যাংকের তুলনায় ব্যালান্সশিটের আকারের দিক থেকে ঢাকা ব্যাংক কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। পথচলায় আমাদের গতি কিছুটা ধীর। ঢাকা ব্যাংক জেনে-বুঝে সতর্কতার সঙ্গে সামনে এগোচ্ছে। এজন্য আমাদের শাখার সংখ্যা কিংবা ঋণ ও আমানতের পরিমাণ সমসাময়িক দুয়েকটি ব্যাংকের তুলনায় কিছুটা কম। তবে গত ২৩ বছরে ঢাকা ব্যাংক গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে শক্ত ভিত তৈরি করতে পেরেছে। আমরা রাতারাতি চমক সৃষ্টি করে হারিয়ে যেতে চাই না। ঢাকা ব্যাংক যুগ-যুগান্তর পাড়ি দিতে চায়। মার্চ পর্যন্ত আমাদের ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৭২২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ সময় ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা। ঢাকা ব্যাংকের কাছে আমানতকারীদের ১৭ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা জমা আছে। এর মধ্যে আমরা ১৬ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঢাকা ব্যাংক আড়াইশ কোটি টাকার বেশি পরিচালন মুনাফা করেছে। ব্যালান্সশিট সাইজের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের এ মুনাফা সমসাময়িক অনেক ব্যাংকের তুলনায় বেশি।
বয়সের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ব্যাপ্তি কম বলেই মনে হয়। ব্যাংকের কার্যক্রম সম্প্রসারণে নতুন কোনো উদ্যোগ আছে কি?
দুটি ইসলামী ব্যাংকিং শাখাসহ এখন পর্যন্ত ঢাকা ব্যাংকের শাখা সংখ্যা ১০০। এসব শাখার পাশাপাশি তিনটি এসএমই সেন্টার ও ৫৬টি এটিএম বুথ, ২০টি এডিএম ও দুটি অফশোর ইউনিট নিয়ে ঢাকা ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কলেবর বৃদ্ধির জন্য শাখা সংখ্যা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। এ বছর আমরা একটি শাখা খুলেছি, বছরের বাকি সময় আরো একটি শাখা খুলব। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শাখা খুললে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি। পরিধি বৃদ্ধির জন্য আমরা এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জানানো হয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিং সম্প্রসারণের মাধ্যমে ঢাকা ব্যাংক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছতে চায়। এসএমই ঋণের সম্প্রসারণের পাশাপাশি আমরা আরো ছোট গ্রাহকদের ঋণ দেয়ার একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। এক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
পাঠকের মতামত