টেলিকম ও প্রযুক্তি
7 Shares

জাতীয় তরঙ্গ বরাদ্দ পরিকল্পনা হালনাগাদের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এজন্য ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) বিশেষজ্ঞ নিয়োগের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে বিভিন্ন সেবার জন্য তরঙ্গ নির্দিষ্ট করা হয় জাতীয় তরঙ্গ বরাদ্দ পরিকল্পনা (এনএফএপি) অনুযায়ী। প্রযুক্তির উন্নয়ন ও চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এ পরিকল্পনা হালনাগাদ ও সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি। এজন্য আইটিইউর বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
জানা গেছে, প্রতি তিন-চার বছর পর ওয়ার্ল্ড রেডিও কমিউনিকেশন কনফারেন্স (ডব্লিউআরসি) আয়োজন করে আইটিইউ। প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ও চাহিদার প্রয়োজনে অঞ্চল ও সেবাভিত্তিক তরঙ্গ বরাদ্দের বিষয়ে দিকনির্দেশনার জন্য এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে আইটিইউর নির্ধারিত তিনটি অঞ্চলের জন্য সেবাভিত্তিক তরঙ্গ নির্দিষ্ট করা হয়। প্রতি ডব্লিউআরসির পর পরই দিকনির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের তরঙ্গ বরাদ্দ কর্মপরিকল্পনা নির্দিষ্ট করে আইটিইউর সদস্য দেশগুলো, যা পরবর্তী সম্মেলন আয়োজনের আগ পর্যন্ত কার্যকর থাকে।
বাংলাদেশের প্রথম এনএফপিএ তৈরি করা হয় ২০০৫ সালে। বিশ্বব্যাংকের প্রকল্পের আওতায় এটি তৈরিতে সহায়তা করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইন্টারকানেক্ট কমিউনিকেশন লিমিটেড। বিশ্বব্যাংকের ওই প্রকল্পের আওতায়ই ২০১০ সালে এনএফপিএ সংশোধন করা হয়। এতে হেলিওস টেকনোলজিস লিমিটেড নামের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হয়।
সর্বশেষ ডব্লিউআরসি অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালে। অন্যদিকে বাংলাদেশের এনএফপিএ পর্যালোচনা করা হয়নি ২০১০ সালের পর থেকে। ফলে তরঙ্গ বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আইটিইউর নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ধরনের আইনি সহায়তা দাবি করা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। এ অবস্থায় এনএফপিএ পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে আইটিইউর আঞ্চলিক কার্যালয়ে পরামর্শক নিয়োগের জন্য যোগাযোগও করা হয়েছে। এনএফপিএ পর্যালোচনায় আইটিইউর পরামর্শক সেবা নেয়ার বিষয়ে অনুষ্ঠেয় চুক্তির বিষয়টি এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। সংস্থাটি জানায়, এ সেবা নিতে প্রয়োজন হবে প্রায় ২০ হাজার ডলার।
এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, তরঙ্গ বরাদ্দ কর্মপরিকল্পনা পর্যালোচনা জরুরি। তা না হলে তরঙ্গ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা দাবি করা যাবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনএফপিএ পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিষয়টিতে সহায়তা নিতে এরই মধ্যে আইটিইউর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সংস্থাটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরামর্শক নিয়োগ করা হবে।
প্রসঙ্গত, দেশে তরঙ্গ বরাদ্দ, পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার সামগ্রিক দায়িত্ব পালন করছে বিটিআরসি। তরঙ্গ বরাদ্দ বাবদ প্রতি বছরই সরকারি কোষাগারে বড় অংকের অর্থ জমা দিয়ে আসছে কমিশন। বিটিআরসির তথ্যানুযায়ী, ২০০৫-০৬ থেকে ২০১১-১২ অর্থবছর পর্যন্ত তরঙ্গ বরাদ্দ ফি বাবদ নিয়ন্ত্রক সংস্থার আয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছর এ খাত থেকে ২ হাজার ৪৯৮ ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে থ্রিজির তরঙ্গ বরাদ্দ বাবদ চার সেলফোন অপারেটরের কাছ থেকে প্রায় ৪ হাজার ৮২ কোটি টাকা আয় হয়েছে। পরবর্তী দুই অর্থবছরেও এ খাত থেকে বিপুল অর্থ আয় করেছে সংস্থাটি।
পাঠকের মতামত